প্রস্তুতি ছিল আগে থেকেই । আত্মপ্রকাশ হল ২০০৩-এর জানুয়ারিতে, কলকাতা বইমেলায় – বাংলা ভাষায় সর্বভারতীয় সাহিত্যের মাসিক পত্রিকা ‘ভাষাবন্ধন’। ভারতীয় ভাষাগুলিতে রচিত সাহিত্যের মধ্যে বন্ধন। সংস্কৃতি, সমাজ, রাজনীতির নানামুখের মিছিলে যোগ দিয়ে ভারতীয়ত্বের খোঁজ,শিকড়ের সন্ধান আর একই সঙ্গে নিজের ডালপালা মেলার আনন্দ। তাই ভাষাবন্ধন। এই নাম মহাশ্বেতা দেবীর দেওয়া। সমকালে যার অসংখ্য লেখা ভারতীয় ভাষায় অনুবাদ হয়েছে; বন্ধুবান্ধবরা অনেকেই তৎকালীন ভারতীয় সাহিত্যের দিকপাল। মহাশ্বেতা দেবী হলেন সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি। আর ‘ভাষাবন্ধন’ আসলে যার মস্তিষ্কপ্রসূত এবং ২০০৩ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত যার জীবনযাপনের প্রাত্যহিকে মিশে রইল, তিনি এই পত্রিকার প্রধান সম্পাদক নবারুণ ভট্টাচার্য। তার লেখা প্রথম সংখ্যাটির সম্পাদকীয় লেখাটিতেই স্পষ্ট করা আছে এই পত্রিকা প্রকাশের উদ্দেশ্য-
“এ বিষয়ে নিশ্চয়ই সন্দেহের কোনো অবকাশ নেই যে, যে সংখ্যায় ও পরিমাণে বাংলাসাহিত্য হিন্দি ও অন্যান্য ভাষায় অনূদিত হয় সেই তুলনায় হিন্দি ও অন্যান্য ভারতীয় ভাষার সাহিত্য বাংলায় প্রকাশিত হয় না।‘ভাষাবন্ধন’ এই একমুখী চলাচল বা ‘ওয়ান-ওয়ে ট্র্যাফিক’-এর ধারাটি পাল্টাতে আগ্রহী। … বিদেশী সাহিত্য সম্বন্ধে বিদগ্ধ বাঙালি পাঠক অনেক বেশি ওয়াকিবহাল। কিন্তু অপরাপর ভারতীয় ভাষায় সাহিত্য সম্বন্ধে বাঙালি পাঠকের কোনো আগ্রহই নেই।”
এই আক্ষেপ আগে শঙ্খ ঘোষকেও করতে দেখা গিয়েছিল ‘ঐতিহ্যের বিস্তার’-এ।নবারুণের প্রয়াস এবার বাংলায় সামনে ভারতীয় সাহিত্যকে আয়নার মতো এনে দাঁড় করানো। ভারতীয় সাহিত্যের উৎকর্ষকে তুলে ধরা কেবল নয়, সমকালীন বাংলা লেখালিখির তুলনামূলক চেহারাটাও উঠে আসবে এখানে।
২০০৩-এর প্রথম বছরে মোট ৭টি সংখ্যা প্রকাশিত হয়। পরের বছর থেকেই বছরে ১০টি করে সংখ্যা বের হতে থাকে। বছরে একটি করে উৎসব সংখ্যা- আয়তনে নিয়মিত সংখ্যাগুলির থেকে বৃহদায়তন।সাধারণ সংখ্যাগুলি ৬৪ পৃষ্ঠা থেকে ৭৮ পৃষ্ঠার মধ্যে হত। ডবল ডিমাই সাইজের আকার।সেক্ষেত্রে উৎসব সংখ্যা প্রথম বছরটিতেই হয় ১৪৪ পৃষ্ঠার এবং পরবর্তীকালে এর আয়তন আরো বেড়ে যায়।
শুরুতে ‘ভাষাবন্ধন’-এর কার্যকরী সমিতিটির চেহারা এরকম ছিল-
প্রধান সম্পাদক – নবারুণ ভট্টাচার্য
সম্পাদক –অরবিন্দ চতুর্বেদ, কৃপাশঙ্কর চৌবে
সহযোগী সম্পাদক –অর্ণব সাহা, রাজশ্রী চক্রবর্তী
সম্পাদকমন্ডলী –কমলা প্রসাদ,মংগলেশ ডাবরাল, বীরেন ডাংগওয়াল,
পংকজ বিষ্ট্ , পলাশ বিশ্বাস, প্রভাত পান্ডে, পরিতোষ চক্রবর্তী, রবিভূষণ ও তনুজা মজুমদার
সম্পাদকমন্ডলীর সভাপতি- মহাশ্বেতা দেবী
ব্যবস্থাপক – তথাগত ভট্টাচার্য
প্রকাশনা সৌজন্য – বানী প্রকাশন, নয়াদিল্লি
পত্রিকা দপ্তরের ঠিকানা ছিল নবারুণ ভট্টাচার্যের বাড়ির – এ এস – ১/১, গল্ফ গ্রীন, ফেজ-১, কলকাতা-৭০০০৯৫।
পত্রিকার সাধারণ সংখ্যার দাম ১৫ টাকা। প্রথম সংখ্যার প্রচ্ছদে ছিল কেদারনাথ সিং- এর একটি কবিতার অনুবাদ।তার অংশবিশেষ-
পিঁপড়ে যেভাবে ফেরে নিজের গর্তে…
ও আমার ভাষা
আমি তোমারই ভিতরে ফিরি
চুপ করে থাকতে থাকতে যখন
আমার জিভ অসাড় হয়ে যায়
প্রথম সংখ্যায় রামচন্দ্রূ শুক্ল, প্রেমচাঁদের পুত্র অমৃত রায়, ফণীশ্বরনাথ রেনু, ভীষ্ম সাহানি, জ্ঞানেন্দ্রপতি, অলকা সরাওগী প্রমুখ আরো অনেকের লেখা প্রকাশিত হয়।
প্রথম সংখ্যাটিতে মূলত হিন্দি সাহিত্যের আধিক্য থাকলেও দ্বিতীয় সংখ্যা থেকেই কিন্তু ভাষাবন্ধন অন্যান্য ভারতীয় ভাষাগুলির দিকে ডালপালা মেলে দেয়।প্রথম বছরের লেখক তালিকার আর কিছু নাম দেখলেই সেটা বোঝা যাবে-
হাজারী প্রসাদ দ্বিবেদী, আনন্দ (অনুবাদ, নবারুণ ভট্টাচার্য), ইন্দিরা গোস্বামী,ইরোম্চা সিং, সুপ্রিয়া পন্ডা, হরিব্নস রাই বচ্চন, মুক্তিবোধ, রাজেন্দ্র যাদব, নিরুপমা বরগোহাঞি,পাশ, আত্মারাম করিরাম রাঠোর, নিরালা,মংগলেশ ডবরাল,জিলালি বানো, নিদা ফাজলি, জয়ন্ত মহাপাত্র, ওয়রওয়র রাও, অমৃতা প্রীতম, গুলজার, ইকবাল, এম বি সত্যন, নামদেও ধসাল, কে টি মহম্মদ প্রমুখ।
২০০৩- এর উৎসব সংখ্যা থেকেই দেখা গেল সম্পাদক মন্ডলীতে বেশ কিছু আদল বদল
হয়েছে। পত্রিকায় সংযোজিত হল ‘পুনরুচ্চারণ’, ‘অলিন্দ’, ‘বইপড়া’ বা ‘ফিরেদেখা’-র মতো কয়েকটি নিয়মিত বিভাগ। বহু গুরুত্বপূর্ণ হারানো,বিস্মৃত বা বিস্মৃতপ্রায় লেখার পুনমুদ্রণে সমৃদ্ধ হয়েছে ভাষাবন্ধন ‘পুনরুচ্চারণ’ শীর্ষক বিভাগটির সূত্রে। কার্যত ২০০৪-এর বইমেলা সংখ্যা, অর্থাৎ পত্রিকার প্রথম বর্ষপূর্তির সংখ্যাটিই ছিল অতুলচন্দ্র গুপ্ত, জগদীশ গুপ্ত,জীবনানন্দ দাশ,তারাশঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়, মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়,প্রমথ চৌধুরী, জসীমুদ্দিন,বিজন ভট্টাচার্য, শশিশেখর বসু, হেমেন্দ্রনাথ মজুমদার, সুবীর রায়চৌধুরী,শিশিরকুমার দাশ প্রমুখের পুনর্মুদ্রিত লেখায় সমৃদ্ধ। এটি আবার ভাষাবন্ধন প্রকাশিত প্রথম একটি বিশেষ বিষয়ভিত্তিক সংখ্যাও বটে।‘অলিন্দ’ বিভাগটিতে এবার ভারতীয় সাহিত্যের বন্ধনস্থলটিতে সংযোজিত হল বিশ্বসাহিত্যের সঙ্গে যোগাযোগের নতুন বারান্দাটি। দান্ডে আলিঘিয়েরির দিভিনা কোম্মাদিয়া থেকে পুরগাতোরিও -র নির্বাচিত অংশ দিয়ে সূচনা হল এই বিভাগটির। অনুবাদক শ্যামলকুমার গঙ্গোপাধ্যায় পরবর্তীকালে ইতালীয় সরকার প্রদত্ত দান্তে সম্মান পান তার পূর্ণাঙ্গ অনুবাদটির জন্য।অমিতাভ মালাকারের নির্দেশনায় আখতারুজ্জামান ইলিয়াসের ওপর তথ্যচিত্রের ভাষ্যরূপও আরেক অলিন্দ খুলে দেয়।
‘বই পড়া’ বিভাগটি গ্রন্থ সমালোচনার জন্য শুরু হয় । মূলত বাংলা ও ইংরাজি এই দুই ভাষার বইয়ের আলোচনা প্রাধান্য পেলেও অন্য ভারতীয় ভাষা বা জাপানি বই নিয়েও পর্যালোচনা প্রকাশ হয়েছে।
‘ফিরে দেখা’ বিভাগটি ছিল বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ন অথচ চোখের আড়ালে চলে যাওয়া বইয়ের পাঠ। পরবর্তীকালে এই বিভাগটি বন্ধ হলে অনুরূপ একটি বিভাগ শুরু হয় ‘কেয়ার অফ ফুটপাথ’ সাথে; রাস্তার ধারে বিছিয়ে বিক্রি করা পুরোনো বইয়ের দোকান থেকে প্রায় আবিষ্কার করা বইগুলি নিয়ে নানা পাঠকের পাঠ। পরে শুরু হয় আরেকটি নতুন তাৎপর্যপূর্ণ বিভাগ – ‘আলোর মিছিল’।
বিশ্বসাহিত্যের নানা যুগের বিভিন্ন দিকপাল সাহিত্যিক ও তাদের রচলা নিয়ে মনোগ্রাহী এক একটি আলোচনা। বিখ্যাত এবং অখ্যাত অথচ গুরুত্বপূর্ণ সাহিত্যসাধক চরিতমালা বলা চলে এটিকে। সেফোক্লিস থেকে সি এল আর জেমস অথবা ক্যামু থেকে কোটা শিবরাম করস্থ – নিরন্তর চলেছে এই আলোচনা।
‘দুঃসময়ের কড়চা’ নামে আরেকটি বিভাগে প্রকাশিত হয়েছে সমসাময়িক রাজনৈতিক, রাষ্ট্রীয় পরিস্থিতি বা ঘটনার সমালোচনামূলক গদ্য। এছাড়াও অসংখ্য অনিয়মিত শিরোনামেও কোনো কোনো বিশেষ বা গুরুত্বপূর্ণ লেখাকে চিহ্নিত করা হয়েছে।
২০১৩-র পর পত্রিকাটি রূপান্তরিত হল ত্রৈমাসিকে । বছরে এবার থেকে চারটি করে সংখ্যা – বইমেলা, নববর্ষ, বর্ষা এবং উৎসব সংখ্যা।
এবার হল ডবল ক্রাউন। পৃষ্ঠা সংখ্যা আবার সাধারণ সংখ্যার দ্বিগুণেরও বেশি। পরবর্তীকালে নবারুণ ভট্টাচার্যের মৃত্যুর পর সম্পাদক হলেন শুভেন্দু দাশগুপ্ত। প্রকাশক তথাগত ভট্টাচার্য। সম্পাদকমন্ডলীতে রয়েছেন অরিন্দম সেনগুপ্ত, ভাস্কর ঘোষ এবং রাজীব চৌধুরী। যাবতীয় বর্ণসংস্থাপনার দায়িত্বে আছেন মৌনমিতা রায় এবং দপ্তর সামলান অমিত ঘড়াই। এখন বছরে দুটি করে সংখ্যা প্রকাশিত হচ্ছে।
bhashabandhan
Roadside gems (section named ‘c/o footpath’) Old, rare, forgotten but unforgettable books are re-read and re-visited.
Book Review (section named ‘Boipara’) Latest books of different languages are critically appreciated.
Responses and Epistles from readers. We get enriched by serious and responsible observations and responses by our erudite readers as well as different authors.
TRANSLATION PROGRAMME
WE UNDERTAKE
We are related to the
Department of Comparative Literature, Jadavpur University and Sahitya Akademi
in the field of translation of Indian literature from the very onset of our
literary journey.
Direct translation
from other vernacular languages.
Direct translation from foreign languages such as: Italian, French, German, Russian, Spanish, Japanese, Chinese etc.
Continuously bringing the evaluation of contemporary Indian literary icons such as: Manglesh Dobral, Kedarnath Singh, Namdeo Dhasal, Sashi Tharur, Kashinath Singh, Mamoni Raisom Goswami, Arundhati Roy, Amrita Pritam, Dilip Chitre etc.
BHASHABANDHAN
takes care of the budding and promising authors by publishing their poetry and essays
BHASHABANDHAN
almost for a decade, through its magazine and publishing
wing, has developed an extremely valuable repository of content and offered a profound and well-organised introduction to Indian society and culture, also
cultural tradition of Dalits and their literature.
BHASHABANDHAN
From literature to politics, history and science, our main
aim has always been to encourage more and more original work which is
indigenous in essence, and to provide a contemporary perspective on their
changing status in an era of profound revaluation.
consistent emphasis on quality
BHASHABANDHAN
began its publication wing in 2006, Kolkata Bookfair, showing uncompromising professional elan and literary excellence, with stellar authors :
NABARUN BHATTACHARYA— Three collections of Bengali short stories, a book of poems and a journal of personal-literary-socio-political thoughts.
Huu THINH— A tri-lingual (Bengali-English-Hindi) collection of poems by Vietnamese poet.
BHASHABANDHAN IN FUTURE
shows great enthusiasm and energy style and confidence in announcing
MULTIPLE LITERARY AWARDS from 2012